সেতু না থাকায় দুর্ভোগে মানুষ
ঝিনাই নদীর রাজারহাট-হাটবাড়ী পয়েন্টে বাঁশের সাঁকো
যমুনার শাখা নদী ঝিনাই। এ নদীর ধনবাড়ী উপজেলার রাজারহাট পয়েন্টে সেতু না থাকায় বর্ষাকালে খেয়া আর শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাকোয় পারাপারে মানুষের নিদারুন ভোগান্তি। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, নদীর এ পাড়ে ধনবাড়ী উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের রাজারহাট। আর ওপারে সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের হাটবাড়ী। শতাব্দী প্রাচীন রাজারহাট বিখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র। দুই উপজেলার কৃষিপণ্য বেচাবিক্রি হয় এখানে। নদীর পাড়েই রাজারহাট সিনিয়র মাদ্রাসা, বীরতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হাটবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়। উভয় পাড়ের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখার জন্য নদী পারাপার হয়।
বীরতারা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হাফিজুর রহমান জানান, ‘বাপু এলাকার মাইনষের মেলা দিনের দাবি অইলো একটা ব্রিজ। এইটা করার কথা কইয়া কতোজন কতো মার্কার পরিচয়ে এমপি অইলো, উপজেলা বা ইউপি চেয়ারম্যান অইলো। কিন্তু ভোটাভুটি গেলেগা কেউই মনে রাহে না।’ সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, নদীর এপারে ধনবাড়ী উপজেলার কদমতলী, পাটাদহ, বাঐজান, রাজারহাট, পাঁচনখালি, বালাসূতি, বীরতারা ও বাজিতপুর এবং নদীর ওপারে হাটবাড়ী, রায়দেববাড়ী, দেওহাটখোলা ও উদনাপাড়ার বাসিন্দারা এ পয়েন্টে নদী পারাপার হন। বীরতারা গ্রামের প্রবীণ আব্দুল আজিজ জানান, এলজিইডি টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কের নল্লা থেকে বীরতারা নাহেরের মোড় পর্যন্ত ৮ কিলো সড়ক পাকা করেছে। আর সওজ ধনবাড়ী-সরিষাবাড়ী ভায়া রাজারহাট বিকল্প সড়ক নির্মাণ করেছে অনেক আগেই। এ নদী ঘাটকে কেন্দ্র করে ওপারেও ডোয়াইল ও সরিষাবাড়ী উপজেলা শহর পর্যন্ত এলজিইডি পাকা রাস্তা করেছে। দুই পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় জালের মতো পাকা সড়ক ছড়িয়ে থাকলেও রাজারহাট- হাটবাড়ী পয়েন্টে ব্রিজ না থাকায় নদী পারাপার বা সহজ যোগাযোগের সুবিধা পাচ্ছে না মানুষ। বীরতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, এলাকার মানুষের চাপে দুই উপজেলার দুই সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী এ পয়েন্ট সরেজমিন পরিদর্শন করেন। প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু সেতু হয়নি। ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দীন রতন মানুষের দুর্ভোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, তিন বছর আগে রাজারহাট-হাটবাড়ী পয়েন্টে একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য জামালপুর এলজিইডির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। দুই বছর আগে সরেজমিন তদন্ত করে গেছে একটি টিম। আশা করা যায় দুই এক বছরের মধ্যে এখানে ব্রিজ নির্মাণ হবে। জামালপুর এলজিইডি সূত্র জানায়, বরাদ্দ সাপেক্ষে কাজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধনাবড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফিন বলেন, আমি ঐ এলাকা পরিদর্শন করেছি। সেখানে একটি ব্রিজ খুবই প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অবহতি করা হয়েছে।
বিডিনিউজইউরোপটোয়েন্টিফোরডটকম/৯মে/জই