• রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

কক্সবাজারে পাহাড় কাটা বন্ধে ২২ সরকারী কর্মকর্তাকে বেলার আইনী চিঠি

নিজাম উদ্দিন (ককসবাজার সদর) ডেক্স
আপডেট : সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০

কক্সবাজারে পাহাড় কাটা বন্ধে ২২ সরকারী কর্মকর্তাকে বেলার আইনী চিঠি

কক্সবাজার জেলায় হঠাৎ করে পাহাড় কাটা বেড়ে যাওয়ায় এবং পাহাড় কাটা বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ( বেলা)। একই সাথে দ্রুত সময়ে পাহাড় কাটা বন্ধ ও পাহাড়ে নির্মিত সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অনুরোধ জানিয়ে ৭ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়রসহ ২২ সরকারী কর্মকর্তাকে আইনী চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ( বেলা)।
চিঠিতে এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ আগামী ৭ দিনের মধ্যে অবহিত করার জন্যও অনুরোধ জানানো হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির ( বেলা) পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি সাঈদ আহমেদ কবির ৮ নভেম্বর ডাকযোগে এ চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠি প্রাপ্তরা হলেন-মন্ত্রী পরিষদের সচিব, পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, স্থাপত্য বিভাগের প্রধান স্থপতি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্রগ্রাম বিভাগের পরিচালক ও কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও কক্সবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি।
বেলার এ আইনী চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যমতে, কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটার জন্য গত এক বছরে শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু জরিমানা দিয়ে আবার পাহাড় কেটেছেন তাঁরা। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাহাড়গুলো রক্ষা করা যায়নি। পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বড় একটি অংশ রাজনৈতিক নেতা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
৯ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় জানানো হয়, সারা দেশের মধ্যে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি, ৫৯ হাজার ৪৭১ একর বনভূমি বেদখল হয়ে গেছে। সারা দেশে দখল হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার একর।
পাহাড় কাটার এ উৎসব মূলত শুরু হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ঘুমধুম রেললাইনকে কেন্দ্র করে। রেললাইনের গতিপথে পাহাড় পড়লে তা নির্ধারিত পরিমাপে কাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু এ সুযোগে যে যেমন পারছে, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির পাশাপাশি জমি সমতল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে।
অথচ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির ( বেলা ) কক্সবাজার জেলার সাত উপজেলা নিয়ে করা একটি জনস্বার্থমুলক মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর একটি নির্দেশনাদেন হাইকোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে- কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, চকরিয়া, পেকুয়া ও মহেশখালী এ সাত উপজেলায় অবস্থিত সকল পাহাড়, টিলা ও পাহাড়ী বনকে কোন ধরনের পরিবর্তন, রুপান্তর ও কর্তন করা যাবেনা। করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আদালতের এরকম ঐতিহাসিক ও সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকারপরও বর্তমান কোভিড-১৯ মহামারি সংকটাপন্ন সময়ে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে পাহাড়কাটা চলছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ পাহাড় কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কক্সবাজার জেলাকে পাহাড় শূন্য করে তোলার উপক্রম করেছে। ফলশ্রুতিতে পরিবেশ-প্রতিবেশ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। প্রাকৃতিক ভারসাম্য সম্পূর্ণ হারাতে বসেছে পর্যটন শহর কক্সবাজার। মুলত: কর্তৃপক্ষের কঠোর ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে অব্যাহত পাহাড়কাটার দীর্ঘ প্রভাব হিসাবে পাহাড় ধ্বংস ও প্রাণহাণীর ঘটনা কক্সবাজার জেলার জন্য বিরল নয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পাহাড় কর্তন/মোচন সম্পুর্ণ নিষিদ্ধ। পাহাড় কাটা বন্ধে আইনের এ বিধানের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ও কার্যকর রাখতে উল্লেখিত মামলা ছাড়াও বেলা কর্তৃক একাধিক জনস্বার্থমুলক মামলা দায়ের করে। অর্জিত হয় পাহাড় কাটা বন্ধে একাধিক নির্দেশনা। আদালতের এসব জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পাহাড় কাটা বন্ধ করতে এখনো সক্ষম হয়নি, যা দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবজ্ঞা ও উদাসিনতার পরিচায়ক। সেই সাথে আদালত অবমাননার শামীলও বটে।
বিডিনিউজ ইউরোপ/৯ নভেম্বর/বার্তা সম্পাদক


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ