আজ বিশ্ব রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচে আগামীকাল বিশ্ব রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। বিশ্বের চতুর্থ অলরাউন্ডার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে এক ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং ১০ উইকেট লাভ করেছেন মাত্র তিনজন অলরাউন্ডার।
তাদের মধ্যে একজন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাকি দুইজন হলেন ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার ইয়ান বোথাম এবং পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ইমরান খান। ১৯৮০ সালে সর্বপ্রথম টেস্ট ক্রিকেটে এক ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ইয়ান বোথাম।
এর ঠিক তিন বছর পর ১৯৮৩ সালে এই ক্লাবে যোগ দেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার ইমরান খান। দীর্ঘদিন পর সেই তালিকায় যোগ দেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। ২০১৪ সালে এই বিশ্বরেকর্ড গড়েন তিনি।
এইবার এই রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। ইতিমধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই ম্যাচে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বল হাতে প্রথম ইনিংসে বিশ্বরেকর্ডের খুব কাছে গিয়েছিলেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তুলে নিয়েছিলেন চারটি উইকেট। প্রথম ইনিংসে সুযোগ হাতছাড়া হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও সুযোগ পেয়েছেন তিনি। আজ প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে তিনটি উইকেট হারিয়েছে সে তিনটি উইকেটই নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
তাই আগামীকাল আর মাত্র ৩ টি উইকেট নিতে পারলেই ইয়ান বোথাম ইমরান খান এবং সাকিব আল হাসানের পর চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে এক ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং ১০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়বেন মিরাজ।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে অনেকটা ধৈর্য্য নিয়েই ব্যাট করা শুরু করেন দুই ক্যারিবীয় ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং জন ক্যাম্পবেল। কিন্তু দেখে-শুনে খেলতে থাকা ক্যাম্পবেলকে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে দেননি মিরাজ। ইনিংসের ১৭তম ওভারের প্রথম বলেই তাকে সাজঘরে পাঠান।
আউট হওয়ার পূর্বে এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান করেন ২৩ রান। ১৯তম ওভারে মিরাজে বলে ইয়াসির রাব্বির হাতে ক্যাচ তুলে দেন উইন্ডিজ অধিনায়ক। তিনি ২০ রানে আউট হন। ওয়ান ডাউনে লেখতে নামা মসেলি মিরাজের বলেই এলবিডব্লিউ হওয়ার পূর্বে করেন ১২ রান।
এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে কাইল মায়ার্স এবং বোনার মিলে করেন ৫১ রান। মায়ার্স ৩৭ রানে এবং বোনার ১৫ রানে অপরাজিত রয়েছেন। গতকাল ৩ উইকেটে ৪৭ রান নিয়ে দিন শেষ করে চতুর্থ দিনের খেলায় স্বাগতিকদের হয়ে আজ ব্যাট করতে নামেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক এবং মুশফিকুর রহিম।
মুশি আজ তার ব্যক্তিগত রানের খাতায় যোগ করেছেন মাত্র ৮ রান। দিনের দশম ওভারের প্রথম বলেই রাখেম কর্নওয়ালের শিকার হন তিনি। আউট হওয়ার পূর্বে করেন ১৮ রান।
দলীয় ৭৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে ঠিক তখন গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ উপহার দিয়েছেন অধিনায়ক মুমিনুল হক এবং লিটন দাস। দুজন মিলে করেছেন ১৩৩ রানের জুটি। লিটন দাস ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন।
আউট হওয়ার পূর্বে করেন ৬৯ রান। এদিকে মুমিনুল পূর্ণ করেন নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ১০তম সেঞ্চুরি। আর তাতেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির মালিক হওয়া গৌরব অর্জন করেন।
লিটন-মুমিনুল আউট হওয়ার পর মিরাজ, তাইজুল এবং নাঈমরা মিলে দলীয় স্কোর ১০ রান যোগ করতে পেরেছেন। আগের ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মিরাজ সাজঘরে ফেরেন ৭ রানে। ২ রানে আউট হয়েছেন তাইজুল ইসলাম। আর নাঈম অপরাজিত থাকেন ১ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন রাখেম কর্নওয়াল এবং জোমেল ওয়ারিকান। এছাড়া দুটি উইকেট নেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৪৩০ রান সংগ্রহ করে মুমিনুল হকের দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেটের বিনিময়ে সফররত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৫৯ রান।
বিডিনিউজ ইউরোপ /৭ ফেব্রুয়ারী / জই