পাটগ্রামে মৃত নারীকে বাঁচাতে ওঝার ঝাড়ফুঁক!
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে সাপে কাটা নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পরও সমাহিত না করে ওঝা এনে ঝাড়ফুঁকের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঝাড়ফুঁক করার পর কোনো ফলাফল না আসায় মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) রাতে মরদেহ দাফন করা হয়।
মৃত তছিরন নেছা (৫০) পাটগ্রাম পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মির্জারকোর্ট ডাহাহাটির ডাঙ্গা গ্রামের তছলিম হোসেনের স্ত্রী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় তছিরন নেছা একইগ্রামে তার মেয়ের বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময় পথে তার পায়ে সাপে ছোবল মারে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে আহত অবস্থায় পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) ভোরে তিনি মারা যান।
সন্ধ্যায় স্থানীয় এক ওঝা জানান সাপে কাটা ব্যক্তি চেতনাহীন ভাবে কয়েকদিন বেঁচে থাকে। এতে নিহতের পরিবারের লোকজনের মাঝে বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। বাড়িতে মরদেহকে কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখে। পরে ওঝা মৃত ওই নারীকে পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করেন এবং আড়াই ঘণ্টা ঝাড়ফুঁক করেন। কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি না হলে স্থানীয় লোকজনের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওঝা জানান তার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে রাতেই তছিরন নেছার দাফনকাজ সম্পন্ন হয়।
এদিকে মৃত ওই নারীকে ওঝার মাধ্যমে জীবিত করা হবে এমন খবর শুনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ মির্জারকোর্ট ডাহাহাটির ডাঙ্গা গ্রামে ভীর জমায়।
কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দা কহিনুর ইসলাম জানান, সাপে কাটা মৃত নারীকে ওঝার ঝাড়ফুঁকে জীবিত হওয়ার কথা শুনে আমরা শত শত মানুষ দেখতে এসেছি। এসে দেখি ওই মৃত নারীকে ওঝা পানি খাওয়ানোর চেষ্টা করছে ও বিভিন্ন মন্ত্র পড়ছে। এরপর তিনি প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় ধরে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
এ বিষয়ে ওঝার ঝাড়ফুক দেখতে আসা পৌরসভার বাসিন্দা মোকছেদুল ইসলাম বলেন, আমি কখনো দেখিনি ঝাড়ফুঁক দিয়ে মৃত ব্যক্তি আবার জীবিত হয়। এ জন্য দেখতে এসেছি।
বিডিনিউজ ইউরোপ /৪ নভেম্বর / বার্তা সম্পাদক