আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে গাড়িতে “স্টিকি বোমা” হামলায় শহরের ডেপুটি গর্ভনর ও সচিব নিহত!
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ডেপুটি গর্ভনর মাহবুবুল্লা মোহেবী ও তার সচিব আজ গাড়িতে লুকিয়ে রাখা বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। তারা “স্টিকি বোমা” বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই বোমাএক ধরনের গ্রেনেড জাতীয় বোমা যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বহুল ব্যবহৃত হয়েছিল। এই হামলায় ডেপুটি গর্ভনরের আরও ২ জন দেহরক্ষী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানায়, বিস্ফোরণের পর পরই আফগানিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বোমা বিস্ফোরণের স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। তারা এটিকে “স্টিকি বোমা” বলে চিহ্নিত করেছেন,সম্ভবত একাধিক বোমা গাড়ির কোথাও চুম্বক দ্বারা সংযুক্ত ছিল এবং গাড়ির ঝাকুনির ফলে সেগুলি বিস্ফোরিত হয়। কোনও গোষ্ঠী এখনও এই হামলার কথা স্বীকার করে নি।
গত সপ্তাহে মঙ্গলবারও দেশের ঘোড় প্রদেশে একই রকম হামলায় একজন ডেপুটি প্রাদেশিক কাউন্সিল সদস্য নিহত হয়েছিলেন। সে হত্যাকান্ডেরও দায়-দায়িত্ব কেহ স্বীকার করে নি। বর্তমানে সমগ্র আফগানিস্তানে সাংবাদিক কর্মী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ এই গুপ্ত হামলার শিকার হচ্ছেন। রাজধানী কাবুলে এই মাসে দু’বার রকেট হামলা হয়েছে এবং সম্প্রতি স্থানীয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের গণহত্যা সহ শিক্ষা কেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ হতে দেখা গেছে। অবশ্য ইসলামিক স্টেট গ্রুপ IS বলেছে, যে তারা ছাত্র হত্যাকাণ্ড এবং রকেট হামলা ঘটিয়েছে।
আফগান নিউজ চ্যানেল টোলো টিভি জানিয়েছে যে, মঙ্গলবারের এই আক্রমণে কাবুলের ডেপুটি গভর্নর ও তার একান্ত সচিব নিহত এবং তার দুই নিরাপত্তাকর্মীও আহত হয়েছেন। কাতারের দোহায় বিভিন্ন গ্রুপ ও আফগান কর্মকর্তাদের মধ্যে শান্তি আলোচনা সত্ত্বেও তালেবানদের সাথে জড়িত সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। উভয় পক্ষ এখনও যুদ্ধবিরতি বা শক্তি ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারেনি।
গত মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ২ হাজার সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। অবশ্য ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছিল যে,মার্কিন সেনাবাহিনীর এই দ্রুত প্রস্তান তালেবান ও অন্যান্য জঙ্গি দলগুলির পুনরুত্থান মোকাবেলায় আফগান সরকারের ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেবে। অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করেছেন যে, আফগান সেনাবাহিনী দেশের আভ্যন্তরীণ এই গৃহযুদ্ধ ও ধারাবাহিক বিভিন্ন গ্রুপের বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি তাদের নেই।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৫ ডিসেম্বর / জই