• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

কে কখন যে সাংবাদিক হয়ে গেছে বুঝার সুযোগ নেইঃমাঈন উদ্দিন

বিডিনিউজ ইউরোপ ন্যাশনাল ডেক্স
আপডেট : সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২০

কে কখন যে সাংবাদিক হয়ে যাচ্ছে!

সিনিয়র একজন সাংবাদিকের দৃষ্টিতে অতীত ও বর্তমানে রাতারাতি সাংবাদিক হয়ে যাওয়ায় প্রকৃত সংবাদ কর্মী তৈরি হচ্ছে? এমনই কটি প্রশ্নের অবতারণা মূলক একটি লিখনী লিখেছেন
সাংবাদিক মাঈন উদ্দীন হাসান শাহেদ।
উনার লিখাটি হুবহু নিম্নে তোলে ধরা হলোঃ

“১৯৯৭ সালের জুলাই মাস। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী রিলিফ কার্যক্রম চলছিল। বাম ছাত্র সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলাম। সে সুবাদে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকতা পেশায় জড়িয়ে পড়েছিলাম। প্রখ্যাত সাংবাদিক কে জি মুস্তাফা সম্পাদিত দৈনিক মুক্তকণ্ঠ পত্রিকায় চকরিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করি। একই সময়ে চট্টগ্রামের কাগজ দৈনিক ঈশানেও কাজ করি। মাসছয়েক পর ভোরের কাগজ পত্রিকায় কাজ করার পর ১৯৯৯ সালের দিকে প্রথম আলোয় যুক্ত হলাম।
তখন চকরিয়ায় হাতেগোনা কয়েকজন সাংবাদিক ছিলেন। সবাই বয়সে আমার সিনিয়র ছিলেন। আমিও সাংবাদিক তা পরিচয় দিতে তখন বেশ লজ্জা লাগতো।
যাই হোক আমাকে সম্মানীয় এ পেশায় যুক্ত করেছিলেন আমার রাজনৈতিক সহকর্মী দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম। তার হাতেই এ পেশায় হাতেখড়ি। দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করেছি।তখন পেশাটাও বেশ কষ্টের ও সম্মানের ছিল। হাতে লিখে কুরিয়ার করা ও স্পট সংবাদগুলো সেকেলের ল্যান্ড ফোনে পাঠানো বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। কষ্টের মধ্যেও অনেক আনন্দ ও সুখ ছিল। সব কষ্ট নিমিষেই ভুলে যেতাম, যখন পত্রিকার পাতায় পাঠানো সংবাদগুলো ছাপা হতো। আমিও সবসময় চেষ্টা করতাম পাঠানো সংবাদ যেন সাব এডিটরের কাজে গ্রহনযোগ্য হয় এবং সংবাদটি ছাপাতে যেন ঝুঁকি না থাকে।
এখন যারা এ পেশায় আসছেন তা তাদের কাছে রূপ কথায় মনে হবে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির কারণে সাংবাদিকতা পেশায় এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে, কাজ করার সুযোগ বেড়েছে। সাংবাদিকও বেড়েছে যত্রতত্র। কিন্তু সাংবাদিকতার মান কি পর্যায়ে গেছে তা স্ববিস্তারে গেলাম না। আমাদের আমলের সেই সাংবাদিকতা ও বর্তমান সাংবাদিকতার মধ্যে বেশ ফারাক পরিলক্ষিত হচ্ছে। গতকাল থেকে তা আমার কাছে বিষয়টা আরও জোরালো হয়েছে। সাংবাদিকেরাও নেতা হওয়ার জন্যে এখন রাজনৈতিক নেতার মতো কর্মী সৃষ্টি করার মতো সাংবাদিক বাড়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এই লক্ষণ বিপজ্জনক। নানাভাবে কক্সবাজারের সাংবাদিকতা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। অনেকের বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ উঠেছে। তাই এখন সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।
এ ক্ষেত্রে আমার পর্যবেক্ষণ হলো, সাংবাদিক বেড়ে যাওয়ার কারন অনুসন্ধান ও পর্যালোচনা করা জরুরি। এক্ষেত্রে সিনিয়র সাংবাদিক ও যারা পেশায় নিয়মিত তাদের ঐক্যের বিকল্প নেই। নেতৃত্বের জন্যে অযথা দলভারী না করে নিজেদের সম্মান নিয়ে একটু ভাবুন। চেতনা বাদ দিন। মানুষ আপনাদের ভয় পেয়ে কিছু বলে না ঠিক।কিন্তু আড়ালে এগুলো নিয়ে হাসে,গালি দেয়।

এ সময় মনে পড়ে গেলো কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক গিয়াস উদ্দিন আহমেদের কথা। তিনি জেলায় সাংবাদিকদের মান নিয়ে চকরিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তিনি এও বলেছিলেন, দেশের কোথাও এত সাংবাদিক নেই। তিনি ১০ বছর আগে যেকথা বলেছিলেন তা আরও ভয়ংকর পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আমি দীর্ঘ দেড় যুগেরও বেশি এ পেশায় কাজ করেছি।যৌবনের একটি বড় সময়ই পার করেছি। চেষ্টা করেছি নীতিমালা মেনে সাংবাদিকতা করার। অবশ্যই আমি যে হাউসে কাজ করেছি সেখানে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ছিল। সবকিছু ছাপিয়ে নিজের বিবেক বিবেচনা দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে থেকেছি। অনেক সময় ক্ষমতাবান ও প্রতাপশালীদের রোষানলে পড়েছি। তারপরও নিজের পেশা ও দায়িত্বের প্রতি অবিচল থেকেছি। যাক তা লিখে শেষ করার নয়। অনেকেই ভাববেন কেন সাংবাদিকতা নিয়ে লেখা। প্রায় ৫ বছর আগে সর্বশেষ দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকায় কক্সবাজারের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করার পর সাংবাদিকতা পেশা থেকে নিজেকে দূরে রেখেছি,বিরত রেখেছি। অনেকের প্রশ্ন জাগবে- সাংবাদিকতা ও আত্মকথা লেখার কারণ কি?

গতকাল বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চকরিয়া প্রেস ক্লাবের নির্বাচন অনুষ্টানের খবরই ভেসে বেড়াচ্ছে। শুধু অভিনন্দন আর অভিনন্দন। অনেক ফেসবুক ফ্রেন্ড দেখলাম দুই কমিটিকেই অভিনন্দন জানিয়ে পোস্ট দিয়েছে। কয়দিন ধরে শুনছিলাম ঐক্যবদ্ধ প্রেস ক্লাবের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু শেষমেষ দুইটি কমিটিই ঘোষিত হলো। বাহ্ সাংবাদিকদের বিশাল তালিকা। আমার দূর্ভাগ্য সাংবাদিকদের এ তালিকায় থাকা অনেককে এখনও চেনার সুযোগ হয়নি।

বেশ কয়েক বছর ধরে সাংবাদিকতায় রাজনৈতিক চেতনা বেশ জোরালো হয়েছে। অনেক পেশাদার সাংবাদিকও রাজনীতিতে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্থ। রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। তাই সাংবাদিক নেতা হতে পারলে তো আর কথাই নেই। তাই দলভারী করতে অখাদ্য কুখাদ্য সবাই এখন সাংবাদিক! এ সুযোগে অনেক অপরাধীও সাংবাদিকদের খাতায় নাম লিখাচ্ছে। এ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও বিস্তারিত লেখার আগ্রহ আছে। সবশেষে বিনয়ের সঙ্গে বলবো, আপনারা যারা নিয়মিত,পেশাদার ও সিনিয়র সাংবাদিক একটু ভাবুন আমরা পেশাটা কোন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে আত্ম মর্যাদাবোধ সম্পন্ন কেউ এ আসবে কি-না? এ দায় কেউ এড়াতে পারবেন না। সবার বিবেক জাগ্রত হোক। সবার প্রতি শুভকামনা।”
বিডিনিউজ ইউরোপ/৭ নভেম্বর / জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ