ধনবাড়ীতে জমে উঠেছে সুপারির হাট।মৌসুমের শেষ সময়ে জমে উঠেছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার অন্যতম প্রধান পাইকারি বাজার ধনবাড়ী পান হাটি ধনবাড়ী উপজেলার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ রোডের সুপারির বাজার।প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে শুরু করে আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশে এবছর জনপদে সুপারির ফলন তুলনামূলক কম।উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান জানান ধনবাড়ী উপজেলায় হাতেগোনা কয়েকটি সুপারি বাগান থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি আঙিনায় প্রচুর সুপারি গাছ রয়েছে । উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নে সুপারি গাছ বেশি রয়েছে। আর পৌরসভার আংশিক এলাকায় সুপারি গাছ রয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে সুপারি গাছ ভাল হয় নাই।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমের শেষ সময়ে উপজেলার মুশুদ্দি, ধোপাখালি ইউনিয়নের নরিল্ল্যা গ্রামের বাজারে বীরতারা ইউনিয়নের কেন্দুয়া বাজার সহ বিভিন্ন হাট-বাজার গুলোতে মৌসুমের শেষ সময়ে বেশ চড়া দামে সুপারি বিক্রি হচ্ছে।স্থানীয়দের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকার ব্যবসায়ীরা সুপারি পানিতে
ভিজিয়ে (মজিয়ে-পঁচিয়ে) গুদামজাত করতে সুপারি সংগ্রহে হাট-বাজারগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রাখি বা গুদাম ব্যবসায়ীরা বাজারে আসায় সুপারির দাম বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কুড়ি (৫৫ গন্ডা) বা ২২০টি হিসেবে সুপারি বিক্রি হচ্ছে, সাইজ ও রং ভেদে ৩৫০ থেকে ৪২০টাকা পর্যন্ত, মাঝারি সাইজের প্রতি কুড়ি সুপারি ২৮০ থেকে ৩৪০ টাকা ও ছোট (ছাট)
প্রতি কুড়ি সুপারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা দরে।
স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মান অনুযায়ী কুড়ি প্রতি সুপারি কিনে সেগুলো ধনবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে থাকেন। আর বড় ব্যবসায়ীরা মৌসুম জুড়ে সুপারি বিকিকিনির সাথে জড়িত। তবে রাখি বা গুদাম ব্যবসায়ীরা মৌসুমের শুরুতে সুপারি না কেনায় প্রথম দিকে সুপারির দাম তুলনামুলক কম থাকে। কেননা, প্রথম দিকের সুপারি পানিতে ভেঁজালে (পঁচালে) এর মাজ পঁচা দেখা দেয়।
সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, যে হাটে যেমন পরিমান ভাল সুপারি কিনতে পারেন সে অনুযায়ী গুদামজাত করে বাকি গুলো পরের হাটে পুনরায় বিক্রি করে দেন। তবে মৌসুম শেষে সুপারির দর পতন হলে অনেক সময় লোকসানও গুনতে হয়।সর্বশেষ সোমবার সরেজমিনে উপজেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ধনবাড়ী সুপারির হাটে কথা হয় একাধিক বিক্রেতা জাকাত আলী, কেচমত মোড়ল, আবুল কাশেম, দীন মাহমুদদের সাথে। তারা জানান, এ বছর সুপারির ফলন কম হয়েছে। তার উপর মৌসুমের প্রথম দিকে দাম কম ছিল। মাঝখানে দর উঠা-নামা করলেও শেষ সময়ে কয়েক হাটে সুপারি তুলনামূলক কম উঠলেও দাম পাওয়া যাচ্ছে।মুশুদ্দি সুপারি বাগান মালিক ও ব্যবসাযী ফারুখ হোসেন বলছিলেন, অঞ্চল ভেদে চলতি বছর সুপারির ফলন কম-বেশি হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে মাঝ পর্যন্ত সুপারির দাম ওঠা-নামা করলেও শেষ সময়ে বাজার উর্দ্ধমুখি রয়েছে।
স্থানীয় বাগান মালিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, এ অঞ্চলের সুপারির মান বেশ ভাল। বিশেষ করে এখানকার সুপারিতে কষ বেশি। ফলে এ অঞ্চলের সুপারির কদর বা চাহিদা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আলাদা।এক্ষেত্রে কৃষি অফিসের পক্ষে নতুন নতুন সুপারির বাগান তৈরীর জন্য বাগান মালিক ও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১ডিসেম্বর/জই/ধনবাড়ী