• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

সর্বপ্রথম কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার স্থান হিসেবেও প্রসিদ্ধ ‘হেরা গুহা’

এনায়েত হোসেন সোহেল, সৌদি
আপডেট : বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩

মক্কা শরিফ থেকে ছয় কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত একটি পাহাড়ের নাম জাবালে নূর। এই পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত গুহাকে বলা হয় ‘গারে হেরা’ বা ‘হেরা গুহা’।সর্বপ্রথম কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার স্থান হিসেবেও প্রসিদ্ধ এই ‘হেরা গুহা’। এই গুহায় হজরত জিবরাইল (আ.) সর্বপ্রথম প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর কাছে কোরআনের বাণী নিয়ে এসেছিলেন। আর এখানেই বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। এ পাহাড়ে ওঠা একদমই সহজ ছিল না তখন। এর উচ্চতা প্রায় ১ হাজার ফুট।জাবালে নূর পবিত্র কাবা শরীফ থেকে মাত্র দুই মাইল দূরে অবস্থিত। এর নাম হেরা গুহা হলেও বিশ্বব্যাপী জাবালে নূর বা জাবালে হেরা নামেই বেশি পরিচিত।

জাবালে নূর অর্থ হলো নূর বা আলোর পাহাড়। কেননা এ পাহাড়েই আল্লাহর পক্ষ থেকে হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এর ওপর সর্বপ্রথম বরকতময় আলোকিত কোরআন মজিদ নাজিল হয়। যা শুধু মুসলিম উম্মাহ নয় বরং বিশ্ব মানবতার জন্য নূর বা আলো। সে কারণেই এ পাহাড় বিশ্বব্যাপী জাবালে নূর নামেই পরিচিত।

হেরা গুহা খুবই ছোট এর মধ্যকার জায়গা এত কম যে, প্রথম দেখাতেই বিস্ময়কর মনে হবে। এ স্থানেই হজরত মুহাম্মাদ (সা.) ধ্যান মগ্ন থাকতেন। যা লম্বায় ৪ মিটার আর পাশে ১.৫ তথা দেড় মিটার। উচ্চতায় ভালোভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানোও কষ্টকর। যদিও সমতল থেকে পুরো পাহাড়টির উচ্চতা প্রায় হাজার ফুট।

এ পাহাড়ের প্রায় চূড়া সংলগ্ন হেরা গুহায় ৬১০ খ্রিস্টাব্দে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনুল কারিম নাজিল করেন। যদিও এর আগে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) অনেক সত্য স্বপ্ন দেখতেন যা ওহির সমতুল্য।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেরা গুহায় ধন্যমগ্ন থাকা অবস্থায় সর্ব প্রথম হজরত জিবরাইল (আ.) কোরআনের ওহি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।

প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বর্ণনা করেন- ‘এক রাতে তাহাজ্জুদের সময় মানুষের আকৃতিতে একজন ফেরেশতা প্রিয় নবীর কাছে আসেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলেন, পড়ুন। উত্তরে রাসূল (সা.) বলেন, আমি পড়তে জানি না। তারপরও ফেরেশতা তাকে আরো দুইবার পড়ার অনুরোধ করেন, সে দুইবারও প্রিয় নবী জানালেন আমি পড়তে জানি না। শেষ পর্যন্ত ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.) কোরআনের ৯৬ নম্বর সূরা; আল- আলাকের প্রথম ৫ আয়াত পড়লেন। এ ছিলো প্রিয় নবীর (সা.) প্রতি হেরা গুহায় প্রথম ওহি।

জাবালে নূর খ্যাত এই গুহায় ওহি লাভের মাধ্যমেই প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) নবুয়তি পালনের কঠিন জীবনের শুভ সূচনা শুরু হয়। কেননা, তিনি যখন ওহি নিয়ে হেরা গুহা থেকে পাহাড়ের অর্ধেক নিচে নেমে আসলেন, তখন তার কানে একটি কণ্ঠের আওয়াজ আসে- ‘হে মুহাম্মাদ! আপনি আল্লাহর নবী আর আমি জিবরাইল।’

হেরা গুহায় যে দিন প্রথম জিবরাইল (আ.) ওহি নিয়ে আসলেন, সে রাতটি ছিল প্রিয় নবী (সা.) এর জন্য কঠিন রাত। সে রাতে হজরত জিবরাইল (আ.) বিদায় গ্রহণ করার আগ পর্যন্ত প্রিয় রাসূলুল্লাহ (সা.) দিকেই তাকাতেন দেখতেন হজরত জিবরাইল (আ.) সব দিক থেকেই সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আর এতে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে নেমে আসার সময়ই তার নবুয়তি পরিচয়সহ জিবরিইল নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন।

তারপর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেরা গুহা থেকে নিজ ঘরে ফিরে আসলেন। হজরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বললেন, আমাকে কম্বল দ্বারা আবৃত করে দাও, জড়িয়ে ধরো।

হেরা গুহা থেকে কোরআনের প্রথম ওহি নাজিল হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ ২২ বছর ৫ মাস ১৪দিন সময়ে মানব জাতির জন্য সংবিধান হিসেবে প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ওহি নাজিলের মাধ্যমে পুরো কোরআনুল কারিম অবর্তীণ হয়। যার শুভ সূচনা হয়েছিল জাবালে নূরে থেকেই।

আর এ ঘটনার পরই তিনি (সা.) মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী এবং রাসূল হিসেবে পৃথিবীতে আত্মপ্রকাশ করেন।
bdnewseu/22thNovember/ZI/ksa


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ