বার্লিনে ইসরাইলের তীব্র সমালোচনায় এরদোগান ।এরদোগানের এই যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বক্তৃতায় স্তব্ধ হয়ে পড়ে পশ্চিমা মিডিয়া।শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকালে এক ঝটিকা সফরে জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আসেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এসেই তিনি জার্মানির ফেডারেল প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টাইনমায়ার এবং ফেডারেল চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। বিভিন্ন পশ্চিমা মিডিয়া জানায়,এরদোগানের এই সফর পূর্ব থেকেই বিতর্কিত ছিল। কেননা বিশেষ করে গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তুর্কি প্রেসিডেন্টের তীক্ষ্ণ মৌখিক আক্রমণের কারণে।যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, তিনি গাজা উপত্যকায় “গণহত্যা” (গণহত্যা) এবং “ফ্যাসিবাদ” দেশটিকে অভিযুক্ত করেছেন এবং হামাসকে একটি “মুক্তি সংগঠন” হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তবে ইসরাইলের বিরুদ্ধে এরদোগানের অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন শোলজ।
শোলজ এরদোগানের বক্তব্যের বিপরীতে বলেন,তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের গণহত্যা সম্পর্কে একটি শব্দও বলেননি। তবে তিনি জিম্মিদের মুক্ত করার কথা বলেন। তিনি ইসরায়েলি কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদের হামাসের জিম্মিদের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি গাজা যুদ্ধে মানবিক যুদ্ধবিরতিরও আহ্বান জানিয়েছেন। জার্মানি ও তুরস্ক যদি একসঙ্গে এই ধরনের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে পারে, তাহলে এই অঞ্চলকে ‘রিং অফ ফায়ার’ থেকে বাঁচানোর সুযোগ থাকবে। মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
এদিকে তুরস্কের জনপ্রিয় দৈনিক ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে,তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতের বরাত দিয়ে বলেছেন, শিশু ও হাসপাতালে হামলার কথা ইহুদিদের পবিত্র গ্রন্থের কোথাও নেই।‘হাসপাতালে গুলি করা বা শিশুদের হত্যা করা তাওরাতের কোথাও নেই, আপনি এটি করতে পারেন না,’ বলেন তুর্কি নেতা। তিনি বলেন, ইসরাইল নারী, শিশু এবং বৃদ্ধসহ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে নির্বিচারে হত্যা করছে। ইসরাইলের সমালোচনার পুনরাবৃত্তি করে তিনি গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের অবসান ঘটাতে আবারও জরুরি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান। ইসরাইল গাজার হাসপাতালগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে। সেই সঙ্গে টেলিকমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউট এবং তীব্র জ্বালানি সংকট চলছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ আরও জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন, ইসরাইল কি হাসপাতাল, উপাসনালয় এবং গির্জাকে টার্গেট করে? এরপর নিজেই উত্তর দেন, হ্যাঁ, এটাই করছে। এরপর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি একজন মুসলিম হিসেবে এতে মর্মাহত হয়েছি। তিনি গির্জায় হামলার নিন্দা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য পশ্চিমা খ্রিস্টান নেতাদের সমালোচনাও করেন।
অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে এরদোগান বলেন, তুরস্ক ও জার্মানির উচিত গাজায় একটি মানবিক যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করা। এই অঞ্চলে সঙ্কট ছড়িয়ে পড়া রোধ করার একমাত্র উপায় এটি। এরদোগান দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন এ সময়। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি প্রমাণ করেছে যে এটি (দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান) শান্তির জন্য অনিবার্য।তুর্কি নেতা বলেন, তুরস্ক হিসেবে আমাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে
bdnewseu/19thNovember/ZI/berlin