রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হওয়ায় ক্ষুব্ধ ইউক্রেন।রাশিয়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ক্ষেপেছে ইউক্রেন। কিয়েভ এ ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক আইন আরেকবার ধর্ষণের শিকার হলো’ বলে মন্তব্য করেছে।শনিবার (১ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দফতর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জাতি সংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক সদস্য দেশ বছরে এক মাস সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এবং এটি একটি ঘূর্ণায়মন প্রক্রিয়া। রাশিয়া সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিল। ওই সময় ইউক্রেনের ওপর হামলা শুরু করেছিল রাশিয়া। গত মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এর ফলে রাষ্ট্রপ্রধানের মাথায় আন্তর্জাতিক গ্রেফতার পরোয়ানা ঝুলছে এমন একটি দেশ এখন নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হলো।
এদিকে ইউক্রেনের অভিযোগ সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়াকে সভাপতির পদ গ্রহণ করা আটকাতে পারবে না। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, রাশিয়ার এই সভাপতি হওয়া ‘এপ্রিল ফুল দিবসের জন্য সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ তামাশা’ এবং ‘আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা রক্ষকরা যেভাবে কাজ করছে তাতে কিছু ভুল আছে বলে মনে করিয়ে দিচ্ছে।’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলেছেন, এই পদক্ষেপটি ‘আন্তর্জাতিক আইনের আরেকটি ধর্ষণ… যে সত্তা আক্রমনাত্মক যুদ্ধ চালায়, মানবিক ও ফৌজদারি আইনের নিয়ম লঙ্ঘন করে, জাতিসংঘের সনদকে ধ্বংস করে, পারমাণবিক নিরাপত্তাকে অবহেলা করে, তা বিশ্বের প্রধান নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান হতে পারে না।’
জাতিসংঘের ছয়টি প্রধান অঙ্গের অন্যতম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (United Nations Security Council। নিরাপত্তা পরিষদ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে কাজ করে থাকে।
নিরাপত্তা পরিষদের শান্তিরক্ষা অপারেশন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন মাধ্যমে সামরিক অভিযানের ক্ষমতা আছে, এটি জাতিসংঘের এমন একটি অঙ্গ, যেটি থেকে জারি করা রেজুলেশন সদস্য দেশগুলোর জন্য মানা বাধ্যতামূলক। নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ১৭ জানুয়ারি ১৯৪৬ সালে।
নিরাপত্তা পরিষদের পনের সদস্য নিয়ে গঠিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ী পাঁচ পরাশক্তি – চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র স্থায়ী সদস্য। এই স্থায়ী সদস্যদের নিরাপত্তা পরিষদের রেজল্যুশন, নতুন সদস্য দেশ অন্তর্ভুক্তি বা মহাসচিব প্রার্থীর নিয়োগে ভেটো দেওয়ার ক্ষমতা আছে। এছাড়াও ১০ জন অস্থায়ী সদস্য আছে, যারা নিদিষ্ট অঞ্চল থেকে ২ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২এপ্রিল/জই