মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বিশিষ্ট ইস্টার্ন খ্রিস্টান ধর্মযাজক ফাদার হিলারিয়ন হেগি খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়েছেন। সাবেক রাশিয়ান অর্থোডক্স সন্ন্যাসী ও আমেরিকান যাজক ফাদার হিলারিয়ন হেগি তার অনুসারীদের মধ্যে অত্যন্ত সম্মানিত যারা তাকে ব্যতিক্রমী ধৈর্যশীল, দয়ার্দ্র্য এবং পবিত্র বলে মনে করতেন।একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ফাদার হিলারিয়ন হেগি ২০০৩ সালের দিকে অ্যান্টিওকিয়ান অর্থোডক্স চার্চে পরিণত হন। ২০১৭ সালে পূর্ব ক্যাথলিক চার্চে যোগদানের জন্য সেখানে চলে যান। তিনি সেন্ট নাজিয়ানজ, ডব্লিউআই-এর পবিত্র পুনরুত্থান মঠে একজন বাইজেন্টাইন ক্যাথলিক যাজক-সন্ন্যাসী হন। এখন তিনি মুসলমান হয়ে গেছেন’।
ফাদার হিলারিয়ান হেইগির ইসলাম বিষয়ে আগ্রহ অনেক পুরনো। প্রায় ২০ বছর আগে হেইগি একইসঙ্গে মুসলমান এবং খ্রিস্টান হিসেবে পাদ্রির দায়িত্ব পালন করার ব্যাপারে আগ্রহ পোষণ করেছিলেন। তবে তখনও তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। সম্প্রতি তিনি এক ব্লগ পোস্টে তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এখন তার নাম আব্দুল লতিফ।ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টিকে তিনি আবারও ইসলামে ফিরে আসার অনুভূতির সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘আমার ইসলাম গ্রহণ মূলত আবারও ইসলামে ফিরে আসার মতো। অনেকটা যেন, আমি আবার নিজ বাড়িতে ফিরে এলাম।’
২০০৩ সালে ফাদার হিলারিয়ান হেইগি অ্যান্টিওকিয়ান অর্থোডক্স চার্চের আনুগত্য গ্রহণ করেন। পরে ২০১৭ সালে পূর্ব ক্যাথলিক চার্চে যোগদান করেন। তার আগে উইসকনসিনের সেন্ট নাজানিয়ানের হোলি রিজারেকশন মানাস্টেরি থেকে বাইজেন্টাইন ক্যাথলিক যাজক-সন্ন্যাসী হওয়ার বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
পবিত্র কোরআনের আয়াত অবলম্বনে হেইগি তার ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, ‘যেহেতু আমরা জন্মের আগে একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করতাম এবং তার কাছে আত্মসমর্পণ করতাম তাই এটি সত্যিই আমার কাছে বাড়ি ফেরার মতো।’এটাকে সমর্থন করার জন্য তিনি পবিত্র কুরআন থেকেও উদ্ধৃত করেছেন। তিনি লিখেছেন :
‘আর স্মরণ কর, যখন তোমার পালনকর্তা আদম সন্তানদের পেট থেকে তাদের বংশধরদের বের করেছিলেন এবং তাদের নিজেদের সম্পর্কে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করেছিলেন। আল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি তোমার রব নই? তারা উত্তর দিল, ‘হ্যাঁ, আপনি! আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি’। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘এখন বিচার দিবসে আপনার বলার অধিকার নেই, ‘আমরা এ সম্পর্কে অবগত ছিলাম না’। আল-কুরআন (৭:১৭২)
তিনি লিখেছেন, ‘এ কারণেই ইসলামে ধর্মান্তরিতরা প্রায়শই ‘ধর্মান্তর’-এর কথা বলে না যতটা তারা আমাদের আদি বিশ্বাস ‘ইসলামে প্রত্যাবর্তনের’ কথা বলে। ফিরে আসার একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া’।
মুসলিম সম্প্রদায় তাকে উষ্ণ স্বাগত জানিয়েছে উল্লেখ করে হেইগি ওরফে আব্দুল লতিফ বলেন, ‘মুসলিম সম্প্রদায় আমাকে ব্যক্তিগত এবং অনলাইন উভয় ক্ষেত্রেই অবিশ্বাস্য উষ্ণতা এবং আতিথেয়তা দেখিয়েছে। এমন আতিথেয়তা আমি আগে কখনোই দেখিনি।’ সূত্র : উমিদ ডটকম।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২মার্চ/জই