• শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
সিরিয়ার দীর্ঘ ৫৪ বছরের পতন আসাদের পলায়ন ভোলার স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান “পরিবর্তন যুব উন্নয়ন সংস্থার” সনদপত্র অর্জন ভিয়েনা বিশ্বের মানুষের বাসযোগ্য শ্রেষ্ঠ শহর থেকে একধাপ সরে এলো মারাত্মক বন্যার কবলে মালয়েশিয়া মধ্যপ্রাচ্যে অস্ট্রিয়ার মানবিক সহায়তা সাড়ে সাত মিলিয়ন ইউরো জার্মানির অভিবাসন নীতি বদলে ফেলার বিপক্ষে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভ্যুত্থান পরবর্তী লুটপাট বন্ধ হওয়ায় ভারত বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে চায়:রিজভী ভোলার বীর সন্তান শহীদ শাকিল কে স্মরণীয় রাখতে ডিসি কে স্মারকলিপি প্রদান দেশকে তপ্ত শ্মশানে পরিণত করতে চাই:জামায়াত ঝালকাঠি তে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ক্যাবের মানববন্ধন

তিন উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত উপকূলীয় বাহারছড়া

জহিরুল ইসলাম ন্যাশনাল ডেক্স থেকে বিডিনিউজ ইউরোপ
আপডেট : শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২

তিন উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলোয় আলোকিত উপকূলীয় বাহারছড়া।বুকে লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মানুষ যে পরিশ্রম করে সঠিক লক্ষ্যমাত্রার দিকে ধাবিত হয়ে সফল হয়; তা প্রমাণ করলেন উপকূলীয় অঞ্চল বাহারছড়ার তিন কৃতি সন্তান। নিরলস পরিশ্রম তাদের দিয়েছে প্রতিষ্ঠা আর বাহারছড়াবাসীকে দিয়েছে আত্মমর্যাদা। কক্সবাজারের সর্বদক্ষিণ সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ। এই উপজেলার অন্তর্গত ৫নং বাহারছড়া ইউনিয়ন মাদকের দুর্গন্ধে দূষিত একটি এলাকা। কালের বিবর্তনে অনেক উচ্চশিক্ষিত সন্তানরা ওই জনপদে জন্মগ্রহণ করে আসছে। কিন্তু মাদকের আগ্রাসন প্রকৃত মেধাবীদের আলোয় আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন-শক্তি দমিয়ে রাখতে পারেনি। প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে তারা ধারণ করেছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে সম্মাননা।

বাহারছড়া ইউপির ৩নং ওয়ার্ড শিলখালী। এই এলাকার প্রতিকূল পরিস্থিতিতে হাল না ছেড়ে আজ সফল হওয়া স্বপ্নবাজ তিন চিকিৎসক মানুষের হৃদয়ের করিডোরে স্থান করে নিয়েছেন। মানবতার সেবার মাধ্যমে তারা এলাকায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

এই তিন চিকিৎসক হলেন ডা. শাকের আহমেদ বাহাদুর,ডা. জিয়াউল করিম,ডা. আব্দুল কাদের।

৩নং ওয়ার্ড শিলখালীর সাবেক ইউপি সদস্য মুহাম্মদ সেকান্দর ও রোকেয়া খাতুনের ছেলে ডা. শাকের আহমেদ বাহাদুর। ২০০৮ সালে বাইতুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি কক্সবাজার থেকে এসএসসি, ২০১০ সালে কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০১৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ গাজীপুর ঢাকা থেকে এমবিবিএস পাস করেন। ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ৫০তম সমাবর্তন লাভ করেন তিনি (৪ মার্চ ২০১৭)।

একই এলাকার ডা. জিয়াউল করিম হারুন উর রশিদ ও সুফিয়া আক্তার ছেলে। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড় সন্তান। তার জন্মের পরপরই তার বাবা-মার সাথে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানেই তিনি তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ জেদ্দা থেকে এসএসসি, ২০১১ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ৫২তম সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটান। তিনি বর্তমানে সার্জারি বিষয়ে ঢাকার কিং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত রয়েছেন।

ডা. আব্দুল কাদের একই এলাকার হাজী মকবুল আহমেদ ও জোহরা বেগমের ছেলে। ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম বাইতুশ শরফ আইডিয়াল কামিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, ২০১০ সালে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা ঢাকা থেকে এইচএসসি তথা আলিম ও ২০২০ সালে তাইরুন্নেসা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ ঢাকা থেকে তিনি এমবিবিএস সম্পন্ন করেন। সম্প্রতি সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ৫৩তম সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি গঠান। তিনি ৫ ভাই বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সন্তান।

ডা. শাকের আহমেদ বাহাদুরের বড় ভাই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং লন্ডন প্রবাসী আলী আহমেদ মোর্শেদ বলেন, ‘অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ভাইয়েরা মিলে তাকে চিকিৎসা পেশায় সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জন করাতে সক্ষম হয়েছি। তার কাছে আমাদের চাওয়া দেশের গরীব অসহায় মানুষের পাশে থেকে মানব কল্যাণে কাজ করে যাবে। এটি হবে আমাদের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি।’

ডা. জিয়াউল করিমের বাবা সৌদি প্রবাসী হারুন বলেন, ‘সন্তানের এই বিশাল প্রাপ্তিতে আমি এবং আমার পরিবার পরিজন যথেষ্ট সন্তুষ্ট এবং মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি তার দীর্ঘায়ু জীবন। সে অবহেলিত এলাকার অসহায় মানুষের পাশে থেকে চিকিৎসার মতো মৌলিক বিষয় মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবে এমনটি আশা আমাদের।’

ডা. আব্দুল কাদেরের বড় ভাই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবাদুল হক বলেন, ‘মহান আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশি শুকরিয়া আদায় করছি পবিত্র কোরআনে হাফেজ বানিয়ে চিকিৎসকের মতো মহান পেশায় প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি আমার ভাইকে। একাধারে হাফেজ এবং চিকিৎসক এ দুই কৃতিত্ব আবদুল কাদেরের অর্জিত হওয়াই আমি আমার গর্বিত মা-বাবা এবং আত্মীয়-স্বজনসহ সকলের পক্ষ থেকে আল্লাহ পাকের কাছে কৃতজ্ঞতা এবং শুকরিয়া আদায় করছি। সে যেন এই মহান পেশায় নিজেকে মানবিক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে রাখে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ভাই আব্দুল কাদের মানবতার দৃষ্টি নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছে। গরিব অসহায় মানুষের মাঝে করোনা সময়ের আগে থেকে বিনা পয়সায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে। এটি দেখে আমি এবং আমার পরিবার জীবনের চাহিদা এবং আশা পূরণ হয়েছে। সে এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

এলাকার তিন কৃতি সন্তান চিকিৎসকের মতো মহান পেশায় ব্রত হয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হতে শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটিয়েছে। তাদের সেই মহান পেশার আলোয় আলোকিত হয়ে অবহেলিত উপকূলবাসী নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হবেন এমনটাই আশা। পাশাপাশি তাদের মানবিক কর্মের কারণে সমাজ থেকে বিলুপ্ত হবে মহামারি খ্যাত মাদক।

বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২৬নভেম্বর/জই


আরো বিভন্ন ধরণের নিউজ