অবশেষে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা !পদ্মা সেতু উদ্বোধনকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “পদ্মা সেতু শুধু ইট, সিমেন্ট, ইস্পাত ও লোহার একটি ভৌত অবকাঠামো নয়; এটি জাতির গর্ব, সম্মান ও যোগ্যতার প্রতীক।”শনিবার (২৫ জুন) সকালে বহুল আলোচিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উৎসবে মেতে উঠেছে পদ্মা পাড়ের মানুষ, সঙ্গে দক্ষিণ- দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। এ যেন রাজধানীর দুয়ারে দক্ষিণ- দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের হাতছানি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সেতুটি বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে আমাদের আবেগ, সৃজনশীলতা, সাহস, সহনশীলতা ও আমাদের অধ্যবসায় জড়িত।”
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুর মাওয়া প্রান্তে ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচন করার পর উচ্ছ্বসিত জনগণ প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায়, লাখ লাখ মানুষ জমকালো এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়।প্রথম নাগরিক হিসাবে পদ্মা সেতুর প্রথম টোল পরিশোধ করে সেতুটি অতিক্রম করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক এই মুহূর্ত উপলক্ষে এবং দেশের বৃহত্তম মেগা প্রকল্পের জমকালো উদ্বোধনের অংশ হিসেবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, ওপেনিং ডে কভার, সীলমোহর ও ১০০ টাকার একটি নোটও উন্মোচন করেন।
সরকারি তথ্য মতে, সেতুটি রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চললের ২১ জেলাকে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। এটি জিডিপি প্রবৃদ্ধি এক দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করবে এবং বার্ষিক শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য দূর করে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখবে।
শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতুতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। এসময় অনেকে নিরাপত্তার জন্য নির্মিত কাঁটাতার ভেঙ্গে ও সেতুর রেলিং ভেদ করে সেতুতে উঠে পড়েন। শনিবার (২৫ জুন) দুপুরের পরে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
ভয়েস অফ আমেরিকার এক খবরে বলা হয়েছে
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পূর্বে বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবারের (২৫ জুন) জন্য দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, “জনগণের শক্তি হৃদয়ে ধারণ করে আজ আমরা নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি। আমি দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।”
বানীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২৫ জুন বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবময় ঐতিহাসিক দিন। প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত দেশের বৃহত্তম ‘পদ্মা সেতু’ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এই শুভ উপলক্ষে আমি দেশবাসীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।” শেখ হাসিনা আরও বলেন, “এই সেতু বার্ষিক শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখবে।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও সমর্থনে আজ উন্নয়নের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আগামী দিনেও জনগণের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।”
শেখ হাসিনা, চ্যালেঞ্জিং ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী, পরামর্শক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেনা সদস্য ও নির্মাণ শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের অবদান ও অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য শুভেচ্ছা জানান। প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি ও বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদানের জন্য সেতুর দুই প্রান্তের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২৭জুন/জই