ইউরোপের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাশিয়াকে চরম হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। বিগত একমাস ধরে রক্ত ঝরছে ইউক্রেনে। এই যুদ্ধে ন্যাটো জোট বা যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুক্ত না হলেও ইউক্রেনকে সমর্থন জানিয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা ভয়েস অফ আমেরিকা জানিয়েছেন ন্যাটোর সম্মেলনে যোগ দিতে বর্তমানে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থান করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাঁডেন গতকাল স্পষ্ট ভাষায় রাশিয়ার উদ্দেশে বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যদি রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেন তাহলে ন্যাটো জবাব দিতে বাধ্য হবে।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘যেমন ভাবে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করা হবে ঠিক তেমনইভাবে তার পাল্টা জবাব দেবে ন্যাটো।’ইউক্রেন যুদ্ধের এক মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনও জারি রয়েছে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার নির্বিচারে হামলা। ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে ‘সহায়তা’ করেছে ন্যাটো। এই আবহে এবার ইউরোপের আকাশে ঘনিয়ে এসেছে পারমাণবিক যুদ্ধের কালো ছায়া। তবে অনেকেরই মত, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও পারমাণবিক হামলা চালাবে না কোনও পক্ষই। তবে এই একই আশ্বাস দেওয়া যাচ্ছে না রাসায়নিক অস্ত্রের ক্ষেত্রে। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে প্রত্যয়ী ইউক্রেনীয়দের উপর। এহেন পরিস্থিতিতে মস্কোকে চরম হুঁশিয়ারি বার্তা দিয়ে রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ভয়েস অফ আমেরিকার খবরে আরও বলা হয়েছে,
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার বলেন রাশিয়া যদি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে তবে পশ্চিমের সামরিক বাহিনী তার উপযুক্ত জবাব দেবে।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর
দফতরে এই সংবাদ সম্মেলনের সময়ে একজন সংবাদদাতার প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, “ এতে এ ধরণের সাড়া দেয়া হবে। আপনারা এ কথা জানতে চান কিংবা চান না যে ন্যাটো কি ( রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করতে ইউক্রেনে) প্রবেশ করবে , সেই সিদ্ধান্ত আমরা সেই সময় নেবো”।
ন্যাটোর সদর দপ্তরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরও বলেন যে রাশিয়াকে প্রধান অর্থনীতি সমৃদ্ধ ২০ জাতিগোষ্ঠী থেকে সরিয়ে ফেলা উচিৎ এবং ইউক্রেনকে এই জি-টুয়েন্টির বৈঠকে যোগ দিতে সুযোগ দেয়া উচিৎ।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণের এক মাস পূর্তির এই দিনটিতে এই প্রসঙ্গটি বিশ্বের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের সময়ে উত্থাপন করা হয় বলে বাইডেন নিশ্চিত করেছেন।
যথন জানতে চাওয়া হয় যে রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র-বিরতি করার জন্য ইউক্রেনকে কি তার কোন অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে তখন বাইডেন জবাবে বলেন, “ আমারতো মনে হয় না তাদের সেটা করতে হবে” তবে সে সিদ্ধান্ত ইউক্রেনই নিতে পারে। তাঁর সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন বলেন যুক্তরাষ্ট্র “ ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয়কে ত্রাণ দেয়ার জন্য”মানবিক সাহায্য বাবদ ১০০ কোটি ডলারের ও বেশি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট বলেন , “ পরিবারদের পুনর্মিলনের উপর গুরুত্ব দিয়ে”, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনিয়ার এক লক্ষ লোককে স্বাগত জানাবে এবং ইউক্রেন ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য ৩২ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।
বৃহস্পতিবার দিনে আরও আগের দিকে ন্যাটো ঘোষণা করে যে এই প্রতিরক্ষা পশ্চিমা সামরিক জোটটি তার সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি কোন রকম সীমাবদ্ধতা না রেখেই তাঁর দেশকে আরও অস্ত্র দেবার জন্য ন্যাটোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। জেলেন্সকির এই আবেদনটি এমন এক সময় এলো যখন রুশ আক্রমণের বিরুদ্ধে স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি ব্যবস্থা নিয়ে বাইডেন ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আজ শুক্রবার
তার এয়ারফোর্স ওয়ান দিয়ে ব্রাসেলস ত্যাগ করে পোল্যান্ডের জেঁসফ এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতি রয়েছে এবং স্থানটি ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সড়কপথে মাত্র এক ঘন্টার দূরত্বে অবস্থিত।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/২৮মার্চ/জই