বনদস্যুদের গডফাদার রেঞ্জকর্তা মামুনের অনিয়ম দূর্নীতিতে ছারখার মেহেরঘোনার বনবাগান
কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের মেহেরঘোনা রেঞ্জ।এই রেঞ্জের রেঞ্জ কর্তা মামুন মিয়ার নানা অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।যা ঐ রেঞ্জের বসবাসকারী স্হানীয়দের টপ অবদা হিষ্টুরিতে পরিনত হয়েছে।তিনি এ রেঞ্জে যোগদানের পর থেকে তার অধীনস্থ মেহেরঘোনা সদর বিট সহ অন্য ৪ টি বিটাঙ্চালে বন বাগান কর্তন ও চোরাই পথে পাচার আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসাথে এসব বিটাঙ্চলে অবৈধ দখলদারদের তৎপরতাও মাত্রাতিরিক্ত।অসাধু এ চক্রটি তাকে মোটা অংকে ম্যানেজ করে প্রতিনিয়ত সরকারি বনভূমি কেটে রাতারাতি দখল করে নিচ্ছে।ব্যাপক অনুসন্ধানে জানাগেছে, অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ভূমিদূস্যু চক্র রাজনীতিক প্রভাবে মামুন মিয়ার সাথে আতাঁত করে প্রতিদিনই বনজ সম্পদ ধ্বংস করছে। বৃক্ষ নিধন ও বনভূমি দখলের পাশাপাশি চিহ্নিত একটি সংঘবদ্ধ চক্র ৪ বিটাঙ্চল থেকে মাটি-বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে সরকারের রক্ষিত অরক্ষিত বনাঞ্চল দেদারচ্ছে উজাড় করলেও ভ্রুক্ষেপ নেই মামুন মিয়ার।
স্হানীয় কিছু এলাকাবাসী জানান,দীর্ঘদিন একই কর্মস্হলে চাকরির সুবাদে এসব অপকর্মে মামুন মিয়ার যোগসাজস রয়েছে।প্রভাবশালীরা তার সাথে মধুর সম্পর্ককে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে এমন তৎপরতায় তিনি রাঘববোয়াল বনজ সম্পদ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা না দিলেও নিরহ জনগণকে গাছ কাটার মিথ্যা অজুহাতে মামলার ভয় দেখিয়ে রেঞ্জ ও বিটের লকআপে আটকে রেখে স্বজনদের কাছ থেকে জোরপূর্বক মোটা অংক নিয়ে তাদের ছেড়ে দিচ্ছে।তাছাড়াও তিনি তার অধীনস্থ বনরক্ষীদের কাছে মূর্তিমান আতংকও।তার অবৈধ নির্দেশ পালনে বাধ্য নয় এমন বনকর্মীদের শোকজ সহ বিভাগীয় আইনের ভয় দেখান।এমনকি গত দুই একমাসের মধ্যে ৩ জন বনকর্মীকে উবর্ধতন কর্মকর্তা দিয়ে সাময়িক বহিষ্কার করিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মামুন মিয়ার এসব অনিয়ম দূর্নীতির নাটেরগুরু বিভাগীয় দপ্তরের সহকারী বন সংরক্ষক সোহেল রানা।তার প্রশ্রয়ে মামুন মিয়া ধরাকে সরাঙ্গান ও রাতকে দিন বানাচ্ছেন তিনি।নিয়মিত বাগান পরির্দশনে না গিয়ে উবর্ধতন কর্তৃপক্ষে প্রতিবেদন জমা দিলেও সেই মিথ্যা প্রতিবেদন ঐ সহকারী বনসংরক্ষক হজম করেন বলে সূত্র জানায়।এছাড়া সামাজিক ও সুফল বনায়ন, জোট পারমিট প্রদান ও নিলাম গ্রহণকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা ছাড়া সংশ্লিষ্ট ডিপু থেকে কাঠ সরবরাহ করেন না তিনি।রেঞ্জকর্তা মামুন মিয়া কালিরছড়া বনবিটের উত্তর দক্ষিণে ৩ টি দোকানঘর তৈরির সুযোগ করে দেওয়ার বিপরীতে প্রায় ২ লক্ষ্য টাকা ঘুষ গ্রহন করেছেন বলেও এলাকায় চাওর হয়ে গেছে।এসব অবৈধ দখলদাররা এ টাকার বাইরে প্রতিমাসে আরো ৫ হাজার টাকা দেয়ার চুক্তিতে রাতারাতি দোকানঘর তুলে সেখানে ব্যবসা করছে।এ রেঞ্জকর্তা ধলীরছড়া,মাছুয়াখালী,রাজঘাট ও মেহেরঘোনা সদর বিটাঙ্চলে প্রায় ৫০ একর বনজমি ভূমিদূস্যদের ব্যবসায়ীক কাজে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছেন বলে স্হানীয়দের দাবি।অসাধুরা এসব সরকারি বনাঞ্চলে ঘরবাড়ির পাশাপাশি পোলট্রি ফার্ম,খামার ও মিনি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন।মেহেরঘোনা রেঞ্জের পূর্বাংশে ও মাছুয়াখালী বিটের অদূরে ঈদগাহ নদীতে অসাধু বালি সিন্ডিকেট তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখলেও মামুন মিয়া নিশ্চুপ।
তিনি তাদের বিরুদ্ধে আইনের প্রয়োগ না করে উল্টো তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা পকেটস্থ করে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলনে অবারিত সুযোগ করে দিচ্ছেন।তার বিরুদ্ধে এমন একাধিক অভিযোগ বিভাগীয় দপ্তরে জমা হলেও এসব তদন্তে উবর্ধতন কর্তারা বেখবরে।তার এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচার বিভাগীয় দপ্তরের প্রশাসনিক শাখার কয়েকজন ধামাচাপা দিচ্ছেন।এমনকি অভিযোগের ফাইলও গায়েব করেন তারা।সচেতন মহল মেহেরঘোনা রেঞ্জের অবশিষ্ট বন সম্পদ রক্ষায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় নীতিগত ব্যবস্হা ও তার অন্যতম সহযোগী সহকারী বন সংরক্ষক সোহেল রানা সহ প্রশাসনিক দুষ্ট চক্রের বিরুদ্ধে আশুহস্তক্ষেপ গ্রহন জরুরি মনে করছে।এ বিষয়ে জানতে রেঞ্জকর্তা মামুন মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল বিট কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।আমি সহ সকলের সহযোগীতায় অবৈধ দখলবাজদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান সহ সামাজিক বনায়ন রক্ষায় উবর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পালনে সর্বদা প্রস্তুুত রয়েছি।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৩ নভেম্বর /বার্তা সম্পাদক