বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে উপাচার্যকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে : ছাত্র ফেডারেশন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ফায়েক উজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলন করা নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। অধিকার চাওয়ার স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা রুদ্ধ করার অধিকার কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই। আর এমন বিধিমালা যদি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে বা নীতিমালায় থাকে তবে সেসব স্বৈরাচারী নীতিমালা অতিসত্বর পরিবর্তন করতে হবে। খুবি প্রশাসনের অগণতান্ত্রিক নীতির বড়াই করে স্বৈরাচারী কায়দায় ছাত্র-শিক্ষকদের বহিস্কার ও অপসারণের ঔদ্ধত্য ছাত্রসমাজ সহ্য করবে না। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে জাতির কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাইতে হবে উপাচার্যকে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে দমনপীড়নের সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ন্যায়সঙ্গত পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছেন, তারা কোনো অন্যায়-অপরাধ করে নি। আন্দোলনের দাবি না মেনে নিয়ে উল্টো আন্দোলনকারীদের হয়রানি করাটাই অন্যায়, অমানবিক কাজ। বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমান এবং ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুল ইসলাম সোহানকে যথাক্রমে দুই ও এক বছরের জন্য বহিষ্কার করার ঘোষণা আন্দোলন দমনের কূটকৌশল। গত বছরের ১৩ অক্টোবর, ৯ নভেম্বর, ৭ ডিসেম্বর, ১৩ ডিসেম্বর এবং ১৮ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় প্রশাসন। এভাবে বারবার নোটিশ দিয়ে কাউকে হয়রানি করা কোনো প্রশাসনের কাজ নয়। বিনা অপরাধে শিক্ষকদের বারবার নোটিশ প্রদানের কারণে শিক্ষকদের পাঠাভ্যাস, লেখালেখি, গবেষণা, পাঠদান ও মানসিক স্বাস্থ্যের কী ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে সে বিষয়ে খুবি প্রশাসনের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই।
খুবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানানোয় বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল ও প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে অপসারণের সিদ্ধান্তটি প্রশাসনের অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক।
জাহিদ সুজন আরো বলেন, বেতন কমানো, আবাসন ব্যবস্থা, উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা, অবকাঠামো নির্মাণসহ পাঁচ দফা দাবির আন্দোলন যৌক্তক ও ন্যায়সঙ্গত। এসব গণতান্ত্রিক দাবির আন্দোলন কোনো ক্রিমিনাল অফেন্স নয়। কিন্তু উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত কলরেকর্ড, ফেইসবুক, মেসেঞ্জারে নজরদারি এবং আঁড়িপাতার কাজটি করেছেন এবং সদর্পে সেটা সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, যা ব্যক্তির গোপনীয়তা ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন। ওই দুই শিক্ষার্থী বা তিন শিক্ষক কোনো অপরাধ বা দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন না কিন্তু খুবি স্বেচ্ছাচারী উপাচার্য অধ্যাপক ফায়েক উজ্জামানের নামে নিয়োগ বাণিজ্য, যৌন নিপীড়ন, অবকাঠামো নির্মাণে আর্থিক দুর্নীতিসহ বহু অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন এক যৌথ বিবৃতিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অপসারণ-বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়া ও স্বৈরাচারী নীতিমালা পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়ে এসব কথা বলেন।
বিডিনিউজ ইউরোপ /২১ জানুয়ারি / জই