‘জনগণের সম্মিলিত শক্তির সামনে কোন স্বৈরতন্ত্রই টিকবে না’
আজ (২১ জানুয়ারি, ২০২১) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ভাসানী অনুসারী পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ এবং রাষ্ট্রচিন্তা এই চার সংগঠনের উদ্যোগে ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আসাদ এর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে শহীদ আসাদ বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ৪ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক তাৎক্ষণিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাবলু। বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য রাখাল রাহা, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রাশেদ খান, যুব অধিকার পরিষদের আহবায়ক আতাউল্লাহ। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, “আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্রের নামে দেশের গণতন্ত্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিল সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে উন্নয়নের বোলচাল দিয়ে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সেই অভিলাস পূরণ হয়নি। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানে উন্নয়নের দশক পালনের প্রাক্কালেই পতন ঘটে আইয়ুব শাহীর। শহীদ আসাদ নিজের জীবনের বিনিময়ে সেই গণঅভ্যুত্থানের সূচনা করেছিলেন। আসাদ তাই ইতিহাসে বীর হিসেবেই বেঁচে থাকবেন।
আইয়ুব খান সমস্ত ক্ষমতা তার হাতে কেন্দ্রীভূত করেছিল, কথা বলার অধিকার হরণ করেছিল, ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল সর্বত্র। কিন্তু ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ৫২ বছর পরেও আমরা দেখছি রাষ্ট্রক্ষমতা একটি পদেই কেন্দ্রীভূত আছে। রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নির্যাতনের মাত্রা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনী ব্যবস্থা ও মানুষের ভোটাধিকার ধ্বংস করে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্বাভাবিক পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। মানুষে মানুষে বৈষম্য প্রকটতর হয়েছে। বিদেশে সম্পদ পাচারের পরিমাণ বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতি গোটা অর্থনীতিকেই গ্রাস করেছে। কোটি কোটি জনগণের শ্রমে, ঘামে অর্জিত সম্পদ চলে যাচ্ছে মাত্র কয়েকশ পাচারকারীদের দখলে।”
বক্তারা আরো বলেন, “৬৯’র গণঅভ্যুত্থানই দেশের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার বীজ পূঁতে দিয়েছিল। জনগণকে মুক্তির লড়াইয়ে সক্রিয় করেছিল। গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছিল জনগণের সম্মিলিত শক্তির সামনে কোন স্বৈরতন্ত্রই টিকে থাকতে পারে না। জনগণের সেই শক্তি গড়ে তুলে দেশে জনগণের গণতন্ত্র কায়েম করার মাধ্যমেই আসাদের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
বিডিনিউজ ইউরোপ /২০ জানুয়ারি / জই