পিবিআইর ভূমি অধিগ্রহণ কেলেঙ্কারি
এএলও বিজয় সিংহ আটক আতংকে সিন্ডিকেটের অন্যরা
কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখার অনিয়ম-দূর্নীতির মোষ্ট ওয়ান্টেড এএলও বিজয় কুমার সিংহ অবশেষে আইনী বাহিনীর কাছে ধরা খেয়েছে।চট্টগ্রাম নগরীর জিইসির মোড়ে আজ সোমবার দুপুরে গোপন সূত্রের অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।দুদকের চট্টগ্রামস্হ সমন্বয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক শরীফ উদ্দীন ভূমি অধিগ্রহণ শাখার এই কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এ নিয়ে এই জালিয়তি কান্ডের ৭ জনকে গ্রেফতার করা হলেও ৩ জন জামিনে রয়েছে বলে জানাগেছে।পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই)কক্সবাজারের জমি অধিগ্রহণ দেখিয়ে জালিয়তি সিন্ডিকেট প্রায় ৩০ কোটিরও অধিক টাকা প্রকৃত মালিকদের অগোচরে পরস্পর যোগসাজশে আত্নসাৎ করার অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে।অভিযোগ তদন্তাধীন অবস্হায় এমন কান্ডে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার ওয়াসিম ও ফরিদ উদ্দীন বিপুল অংকের টাকা সহ গ্রেফতার হয়।পরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে সিন্ডিকেটের দালাল খ্যাত সালাউদ্দিন, কমর উদ্দীন ও সেলিম উদ্দীনকে এলিট ফোর্স র্যাব ও দুদক গ্রেফতার করে।ঘটনার অধিকতর তদন্তে আইনজীবী,সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি পুলিশ কর্মকর্তা সহ আরও প্রায় ৩ ডজন দালালের সম্পৃক্ততা প্রমানিত হয়।প্রেফতারকৃতদের ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে মহা এই জালিয়তি কান্ডের খলনায়ক আইনজীবী নুরুল হক,প্রধান হোতা সিআইপি ইদ্রিসকেও গ্রেফতার করা হয়।এর মধ্যে আইনজীবী নুরুল হক কয়েকদিন জেলখেটে জামিনে এলেও সিআইপি ইদ্রিসের ঠিকানা এখনো জেল হাজতে।অধিগ্রহণ কান্ডের জালিয়তিতে সহযোগীতার দায়ে সার্ভেয়ার কেশব লাল ও দালাল মহিবুল্লাহকেও চট্টগ্রামের জিইসি মোড় থেকে গ্রেফতারের সমর্থ হয় দুদক।তারও আগে আইনের শেকলে বন্দি হয় দূর্নীতির বরপুত্র মহেশখালীর কালারমারছরার সহকারী তহসিলদার জয়নাল আবেদিন।এদিকে দূর্নীতির রথি মহা রথিদের একের পর এক ধরা পড়ার ঘটনায় জালিয়তি কাণ্ডে সহযোগী অন্যদের মধ্যেও দারুন আতংক বিরাজ করছে।তাদের কেউ কেউ আইনী বাহিনীকে ফাঁকি দিতে নিরাপদ দুরত্বে সরে গেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।তাদের মধ্যে গ্রেফতারের ভীতি পেয়ে বসেছে। আতংকে রয়েছে পিবিআই ও দুদকের তদন্তাধীন মামলার অন্য সহযোগীরাও। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয় কক্সবাজারের সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে মামলা নং ০৬/২০২০ এর প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টও জমা দিয়েছেন।সেই প্রতিবেদনে মামলায় অভিযুক্ত গ্রেফতারকৃত ও জামিন প্রাপ্তরা ছাড়াও আরো প্রায় ১০/১২ জন সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে জালিয়তি কান্ডের অবৈধ টাকা ভাগবাটোয়ারার ইতিবৃত্ত তুলে ধরা হয়েছে।প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে দু’সাংবাদিক সহ সিন্ডিকেটের আরো কয়েকজন অবৈধ সুবিধা নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে সোহেল,বেলায়েত হোসেন, আনছারী,আজিজ,ওমর ছিদ্দিক লালু,ফেরদৌস আরা, টিপু সোলতান পুলিশ কর্তা শাহাজানের স্ত্রী সহ কয়েকজন।এদিকে অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বিজয় কুমার সিংহের গ্রেফতার হওয়ায় এ দূর্নীতি মামলার অভিযোগ কারী ও অধিগ্রহণকৃত জমির স্বত্ববান নুরুল আল,মুফিজুর রহমান ও সেলিম গং। তারা জানান,জালিয়তি সিন্ডিকেটের এমন অপকর্মের বিরুদ্ধে আদালত ও আইনী প্রশাসনে এজাহার দায়ের করলেও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের দাপটে তাদের সেই আখাংন্কা ধোপে টেকেনি।অবশেষে দুদক সহ জেলা প্রশাসন কঠোর হওয়ায় দূর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত হয়।তারা এ জালিয়তি কান্ডে সম্পৃক্ত সকলকে আইনের কাঠগড়ায় দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চান। জানাগেছে গ্রেফতারকৃত অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বিজয় সিংহের বর্তমান কর্মস্থল খাগড়াছড়ি জেলায়।সেইখানেও তিনি গরহাজির থাকতেন প্রায়শ।ধরপাকড়ের ভয়ে নিয়মিত অফিস করতেন না বিজয় সিংহ। তিনি অনেকটা ফেরারি জীবন যাপনও করতেন।এসব করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। তার গ্রেফতারের এ খবর বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লে ভুক্তভোগী সেবাপ্রার্থীদের মধ্যে হাসির ঝিলিক স্পষ্ট হয়ে উঠে।কেউ কেউ মহা দূর্নীতিবাজ অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সহ সিন্ডিকেটের সকলকে গ্রেফতার করে প্রকৃত স্বত্ববানদের ক্ষতি পূরণ প্রদানে প্রশাসন সহ দুদকের সুদৃষ্টি চেয়েছেন।
বিডিনিউজ ইউরোপ/১৬মার্চ/জ ইসলাম