ভিয়েনার জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের প্রতি বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন ভিয়েনা সফরররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায়,অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) কার্যালয়ে, সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি।পারমাণবিক শক্তির পরিধি আর না বাড়িয়ে, এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, বিশেষ করে জ্বালানি, খাদ্য নিরাপত্তা, ওষুধ ও স্বাস্থ্য খাতে এর প্রয়োগের কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরপর, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সদস্য হয়। আরা এটা ছিলো কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের প্রথম সদস্য পদ লাভ করা।
পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ এবং পরমাণু সামগ্রীর নিরাপত্তার বিষয়ে বাংলাদেশ অবিচল বলে জানান হাছান মাহমুদ। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ তার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে সর্বোচ্চ স্তরের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা বজায় রাখবে। জাতীয় জ্বালানি দৃষ্টিভঙ্গি উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে ভবিষ্যত শক্তির প্রধান যোগান আসবে সবুজ এবং পরিচ্ছন্ন উৎস থেকে। এ কারণে পারমাণবিক শক্তির কথা বিবেচনা করা হচ্ছে।
“পারমাণবিক কৃষি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন এবং রেডিও থেরাপির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার জন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানাই;” বলেন হাছান মাহমুদ। খাদ্যের জন্য পরমাণু বা ‘অ্যাটমস ফর ফুড’ এবং কার্বন নিঃসরণকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পরমাণু শক্তির ব্যবহার বা ‘অ্যাটমস ফর নেট জিরো’ উদ্যোগের জন্য রাফায়েল গ্রোসির প্রশংসা করেন হাছান মাহমুদ। এমন মহৎ উদ্যোগে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেন তিনি
পরমাণু বিজ্ঞানের প্রয়োগ কাজে লাগিয়ে, মানবকেন্দ্রিক উন্নয়ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে আইএইএ টেকসই সহায়তা প্রদান করবে বলে নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক। এছাড়া, তিনি ‘অ্যাটম ফর ফুড’ উদ্যোগে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার বিশেষ আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
আইএইএ মহাপরিচালক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। বলেন, এই উদ্যোগ সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততায় এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছে।পারমাণবিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প চালুর সময় বাংলাদেশ সফর করার জন্য আইএইএ মহাপরিচালক-কে আমন্ত্রণ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
উল্লেখ্য যে,জাতিসংঘের অধীনস্থ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা – International Atomic Energy Agency (IAEA) বিশ্বে পরমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং সামরিক উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার রোধকল্পে কাজ করে থাকে। এই সংস্থাটি ১৯৫৭ সালের ২৯ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অবস্থিত।
bdnewseu/2May/ZI/Vienna