আগ্রায় গরু জবাই করে দাঙ্গা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা
লাগানোর চেষ্টা ব্যর্থ।ভারতের উত্তর প্রদেশের তাজমহলের শহর আগ্রায় এই ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক উস্কানির পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে প্রায় দুই শত কিলোমিটার দূরে উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের আগ্রার কাছে একটি গরু জবাই করে কিছু মুসলমানকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগে বুধবার একটি ডানপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীর চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। কিছু মুসলমানকে এই মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয় দৃশ্যত মুসলমানদের প্রতি শত্রুতা উস্কে দেওয়ার জন্যই।
ভারতের বিভিন্ন জাতীয় সংবাদ পত্রে এই ঘৃণ্য
সাম্প্রদায়িক উস্কানির খবর ফলাও করে প্রচার করা হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে ভয়েস অফ আমেরিকার খবরে বলা হয়েছে,উত্তর প্রদেশ সহ ভারতের অনেক রাজ্যে হিন্দুদের কাছে গরু পবিত্র পশু বলে বিবেচিত এবং তা জবাই নিষিদ্ধ। ঐ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রায় ৬ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
আগ্রার অন্যতম সহকারী পুলিশ কমিশনার রাকেশ কুমার সিং গত ৮ এপ্রিল সংবাদদাতাদের বলেন, হিন্দু ডানপন্থী সংগঠন অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার (এআইএইচএম) একজন উর্দ্ধতন নেতা জিতেন্দ্র কুশওয়াহা পুলিশের কাছে এই মর্মে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন যে ৩০ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি চারজন মুসলমান ব্যক্তিকে একটি গরু জবাই করতে দেখেছেন।এমনকি ঐ দলটি “অপরাধী মুসলমান” মোহাম্মদ রিজওয়ান ও তার তিন ছেলেকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভও করেছে।
পুলিশ রিজওয়ান ও তার ছেলেদের গ্রেফতার করে এবং তাদের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশ গোহত্যা প্রতিরোধ আইনের অধীনে মামলা দায়ের করে। তবে তদন্তের পরে পুলিশ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ঐ চারজন মুসলমান ব্যক্তি গোহত্যা মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না এবং এআইএইচএমের মুখপাত্র সঞ্জয় জাট গরু জবাই করার ষড়যন্ত্রটি করেছিলেন।৮ এপ্রিল পুলিশ চার মুসলমানকেনির্দোষ ঘোষণা করে এবং হিন্দু কর্মীদের দোষী ও তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানায়।
ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফকে সিং বলেন, “সঞ্জয় জাট মূল ষড়যন্ত্রকারী। তার অনুসারী এবং বন্ধুরা একটি গরু জবাই করেছে… [এবং জিজ্ঞেস করলেন] জিতেন্দ্র কুশওয়াহা মহম্মদ রিজওয়ান [এবং অন্যান্য মুসলিমদের] বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন… পরে তদন্তে জানা যায়, অভিযুক্তের সঙ্গে অপরাধের কোনও সম্পর্ক নেই। কল রেকর্ড থেকে জানা যায় যে “জিতেন্দ্র, সঞ্জয় এবং আরও কয়েকজন যেখানে গো-হত্যা করা হয়েছিল তার কাছাকাছি ছিলেন তবে পুলিশের অভিযোগে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা সেখানে ছিল না। কল রেকর্ডে আরও দেখা যায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ঐ স্থানটিতে যাননি “
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ভারতে রাম নবমীর উত্সবের সময় হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে প্রায়শই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আগ্রার এক অজ্ঞাতপরিচয় পুলিশ কর্মকর্তা দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন,”সামাজিক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার জন্য রামনবমীর প্রাক্কালে গরুটি জবাই করা হয়েছিল।”জাট অবশ্য নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।
তথ্যসূত্র: ভয়েস অফ আমেরিকার ও ভারতীয়
সংবাদ মাধ্যম।
বিডিনিউজ ইউরোপ২৪ডটকম/১৬এপ্রিল/জই